শান্তিপুর গ্রাম, নামের মতোই সেখানে ছিল চিরশান্তি। কোনো চুরি-ডাকাতির ঘটনা কখনো ঘটেনি, আর তাই মোড়ল মশাইয়ের কাজও ছিল নামমাত্র। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই শান্তির গ্রামে দেখা দিল এক নতুন বিপদ—এক ছিঁচকে চোর!
দিনু নামের এক চোর, যে এতদিন বাইরে বাইরে চুরি করত, এবার নিজ গ্রামেই চালাবে তার কারসাজি। একদিন সে দেখে, মিত্র বাবু নতুন আসবাবপত্র কিনে এনেছেন, যার মধ্যে আছে এক সুন্দর ফুলদানি। দিনু ঠিক করে, রাতে গিয়ে সেটাই চুরি করবে।
প্ল্যান মতোই সে রাতে সফল হয় এবং ফুলদানিটি হাতিয়ে নেয়। তবে এখানেই সে থামেনি! একদিন জঙ্গলে সে এক সাধুর জাদুর চাদর চুরি করে নেয়, যা গায়ে দিলে কেউ তাকে দেখতে পাবে না। এবার দিনুর আত্মবিশ্বাস আকাশছোঁয়া—সে নিশ্চিন্তে চুরি করে বেড়াবে!
পরপর কয়েকদিন গ্রামের একাধিক বাড়িতে চুরি হতে লাগল, অথচ কেউ চোরকে ধরতে পারল না। গ্রামবাসীরা চিন্তিত হয়ে মোড়ল মশাইয়ের কাছে গেলে তিনিও অসহায় হয়ে পড়লেন। তখনই শহর থেকে ফেরা এক শিক্ষিত যুবক, বুলটে, এসে বলে—সে একদিনের মধ্যেই চোর ধরবে।
বুলটে বুঝতে পারে, চোর নিশ্চয়ই কোনো জাদুর সাহায্য নিচ্ছে, নইলে কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না! সে গোপনে দিনুর আসল জাদুর চাদর বদলে দেয় এবং গ্রামে খবর ছড়িয়ে দেয় যে সবাই তাদের সোনা-দানা মোড়লের বাড়িতে জমা রেখেছে। খবর শুনে লোভী দিনু ঠিক করে, এবার সে মোড়লের বাড়িতে চুরি করবে।
কিন্তু এইবার সে নিজের গায়ে নকল চাদর জড়ায়, তাই সবাই তাকে স্পষ্ট দেখতে পায়! গ্রামের সবাই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ধরা পড়ে যায় ধূর্ত চোর।
দিনুর দুষ্ট বুদ্ধির ওপর বুলটের চালাকির জয় হয়, আর গ্রামের শান্তি ফিরে আসে। বুলটে সেই জাদুর চাদর তার প্রকৃত মালিক, সাধুর কাছে ফিরিয়ে দেয়। আর এইভাবেই, গ্রামের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চোরের উপর হলো আসল “বাটপারি”!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন